রহমত নিউজ ডেস্ক 25 September, 2023 02:54 PM
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তান বাহিনীর নৃশংস গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিসহ আট দফা দাবি জানিয়েছে সেক্টর কমান্ডারস্ ফোরাম।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ'৭১ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এসব দাবি জানায়। সংগঠনের কার্যনির্বাহী সভাপতি মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সহসভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম হামিদ, মেজর জেনারেল (অব) মোহাম্মদ আলী শিকদার, সাবেক আইজিপি কেএম শহিদুল হক, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারী, আব্দুল মাবুদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের মহাসচিব হারুন হাবীব। তিনি বলেন, শিগগিরই দাবিগুলে তথ্য উপাত্তসহ রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দাখিল করা হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম আন্দোলন চালিয়ে যাবে। জাতিসংঘ শতাব্দী প্রাচীন আর্মেনিয়া গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইউরোপে নির্মম গণহত্যার শিকার লাখো ইয়াহুদি জনগোষ্ঠীর নিধনের স্বীকৃতি দিয়েছে। সম্প্রতিক কালের রুয়ান্ডা, কম্বোডিয়া, সিয়েরা লিওন, বসনিয়ার গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতি দেয়নি। এসময় তারা আট দফা দাবি জানায়।
দাবিগুলো হলো- বাংলাদেশের মাটিতে ১৯৭১ সালে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও তাদের ঘাতক দোসরদের সংগঠিত নিষ্ঠুরতম গণহত্যার আন্তজার্তিক স্বীকৃতি প্রদান করা; জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডের নেপথ্য কুশিলবদের চিহ্নিত করতে অবিলম্বে একটি জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা এবং তদন্তের ফলাফল স্বেতপত্র আকারে প্রকাশ করা; মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে যুগ যুগ ধরে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে বাংলাদেশের সকল অঞ্চল এবং প্রধান প্রধান যুদ্ধক্ষেত্র ও বধ্যভূমিতে ‘মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্তম্ভ' নির্মান করা । সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান বন্ধু রাষ্ট্র ভারতীয় মিত্র বাহিনীর যে সকল সৈনিক আমাদের স্বাধীনতার রণাঙ্গনে জীবন দিয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানাতে স্মৃতিসৌধ নির্মান করা; বাংলাদেশের সকল অভ্যন্তরীণ সংকটের সমাধান অবশ্যই দেশের ভিতর থেকে হতে হবে, বাইরের হস্তক্ষেপে নয়; বাংলাদেশের সংবিধানে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ’ ও ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা' শব্দ গুলির সংযোজন করা। পাশাপাশি জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ‘ভিআইপি’ মর্যাদা নিশ্চিত করা। দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের নিকট পরিবার সদস্যদের জন্য সরকারি খরচে অগ্রাধিকার ভিত্তিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মাসিক সম্মানি ভাতার অংক প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণ করা; জাতির জনকের হাতে তৈরি ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের পুনরুদ্ধার করা এবং দেশের গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক অগ্রযাত্রার স্বার্থে সংবিধানের মূল নীতি বিরোধী উগ্র সাম্প্রদায়িক ও ধর্মান্ধ দলকে নিষিদ্ধ করা। সেই সঙ্গে দেশের সকল অঞ্চলে বাঙালি সংস্কৃতিচর্চার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা করা এবং সকল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের হাতে মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিকৃত ইতিহাস সরবরাহের করা; এবং শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে নতুন প্রজন্মের মানুষের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে ঢাকাসহ বড় শহরের নিকটবর্তী স্থানে স্থায়ী মুক্তিযোদ্ধা সমাধিক্ষেত্র নির্মাণ করা।